ছোট গল্প লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
ছোট গল্প লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই, ২০২০

রাগি মেয়ের ভালােবাসা • পার্ট - ০২ | রাগি মেয়ের প্রেমে পর্বঃ ০২

গল্পঃ রাগি মেয়ের প্রেমে
লেখকঃ শরিফুল ইসলাম জুনিয়র
পর্বঃ ০২
(১ম পর্বের পর থেকে)

হঠ্যাৎ করেই দেখলাম সেই ফালতু মেয়েটা আমার দিকে আসছে। চোখ মুখ লাল হয়ে আছে, আমার কাছে এসে পাশ কেটে চলে গেলো, অন্য একটা টেবিলে গিয়ে বসলো। আরো কতো গুলো গুণ্ডি মেয়ে ওর পাশে গিয়ে বসলো। 

কিছুক্ষণ ওরা নিজেরা নিজেরা কথা বলতে লাগলো, তারপর পুরো দল আমাদের কাছে আসলো....

তন্নিঃ ওই কান ধর,,(আমাকে)

সানিঃ কান ধরবে মানে? কি করছে ও? 

তন্নিঃ ও আমার ফ্রেন্ড ফাহিমাকে চোখ মেরেছে। 

আমিতো পুরা টাসকি খেয়ে গেলাম, তারপর বললাম....

আমিঃ আপনার সমস্যা কি? শুরু থেকেই আমার পিছে লাগছেন। 

তন্নিঃ কিহ! আমি তোর পিছে লাগছি? তোর মতো ছোটলোকের পিছে আমি লাগবো? 

আয়মানঃ এই তন্নি তোর সমস্যা কি? ও আজকেই এই কলেজে আসলো, আর তুই আজকেই ওর পিছে লাগছিস? সমস্যা কি তোর,,,,

তন্নিঃ তোর এতো জ্বলে কেন? ও তোর কি হয়? 

সাদিয়াঃ দেখ তন্নি, ও আমাদের ফ্রেন্ড, শুধু ফ্রেন্ড না, বলতে পারিস বেস্টফ্রেন্ড। 

তন্নিঃ বাহ! প্রথম দিনই বেস্টফ্রেন্ড? আর দুই দিন গেলে তো জামাই বানাই ফেলবি।

সাদিয়াঃ হে বানাবো, তোর কোনো সমস্যা? যা এখান থেকে।

তন্নিঃ ওই চল সবাই (সাথে থাকা মেয়ে গুলোকে) এই ছোট লোকের বাচ্চাকে পরে মঝা বোঝাবো। 

সবাই চলে গেলো, রাগে মাথায় রক্ত উঠে গেলো। শালা বার বার ইচ্ছা করছে আগের রূপে ১ ঘন্টার জন্য ফিরে যাই। আর দেখিয়ে দিই আমি জিনিষ, ছোট নাকি অন্য কিছু দেখিয়ে দিই। আমার চুপ থাকা দেখে সাদিয়া বললো...

সাদিয়াঃ কিরে তোর সাথে তন্নির আগে কিছু হয়েছে? 

আমিঃ হুম, (পুরো ঘটনা বললাম)

আয়মানঃ আচ্ছা বাদ দে, মেয়েটা ফালতু। বাবার ক্ষমতা দেখিয়ে যা ইচ্ছা তাই করে। ওর থেকে দূরে থাকিস। 

সানিঃ ওই এগুলো বাদ দে এখন, খেয়ে নে সবাই। 

তারপর খাওয়াদাওয়া করে বাসায় চলে গেলাম, প্রথমদিক ভালোই কাটছে, যদি তন্নি মেয়েটার সাথে এগুলো না ঘটতো তাহলে আরো ভালো হতো। 

রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবছি, অচেনা একটা ছেলের সাথে তন্নি এমন কেন করলো? তবে তন্নি মেয়েটা কিন্তু অনেক সুন্দর, প্রথম দেখায় যে কেউ প্রেম পড়বে। রাগ টা একটু বেশি মনে হয়। এগুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি মনে নেই। 

সকালে ঘুম থেকে উঠে টিউশনি করিয়ে কলেজে চলে গেলাম। গেইট পার হয়ে একটু ভিতরে গেলাম। গাছ তলায় তন্নির অনেক গুলো গুণ্ডি ফ্রেন্ডস বসে বসে একটা ছেলেকে র‍্যাগ দিচ্ছে। ছেলেটা কান ধরে এক পায়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে। আমি দেখেও না দেখার ভান ধরে চলে যাচ্ছি। এমন সময় একটা মেয়েকে আমাকে ডাক দিলো...

মেয়েঃ ওই চিকনা,,,, 

আমিঃ......

মেয়েঃ ওই তোকে বলছি (আমাকে দেখিয়ে)। এদিকে আয়,,, 

আমিঃ কি হইছে? কি সমস্যা ডাকছেন কেন? 

মেয়েঃ সিনিয়রদের কিভাবে সম্মান দিতে হয় সেটাও জানিস না?

আমিঃ মানে! সিনিয়র কে? 

মেয়েঃ কে আবার আমরা কি সিনিয়র না? 

আমিঃ ওই হ্যালো, আমরা সেম ব্যাচের ওকে? 

মেয়েঃ তোর তো সাহস কম না! মুখে মুখে তর্ক করিস। 

আমিঃ সাহসের কি দেখছেন এখনো? 

মেয়েঃ কিছু বললি? 

আমিঃ না, আমি যাই কাজ আছে। 

মেয়েঃ ওই দাঁড়া! 

আমিঃ কেন? 

মেয়েঃ তুই কান ধরে পাঁচ বার উঠবস করবি? 

আমিঃ মানে! 

মেয়েঃ মানে তুই কান ধরে উঠবস করবি। 

আমিঃ যদি না করি? 

মেয়েঃ মেরে তোর মাংস আলাদা করে ফেলবো,, তুই আমাদের সম্পর্কে ভালো করেই জানিস। 

আমিঃ দেখবো কি করো! 

আর কিছু না বলে ক্লাসে চলে গেলাম, দেখলাম ওরা কাকে যেন কল দিয়ে আসতে বলতেছে। আমি ওদিকে খেয়লা না করে ক্লাস রুমে চলে গেলাম। 

৩য় ঘন্টার সময় আমি সানি, সাদিয়া, ফারিয়া আর আয়মান বসে বসে গল্প করতেছি। এমন সময় ৪-৫ টা ছেলে স্টিলের পাইপ নিয়ে ক্লাসে ঢুকলো। দেখে মনে হচ্ছে না এই কলেজের ছেলে। স্টুডেন্টরা সবাই ভয়ে জড়ো হয়ে বসে আছে। ওদের মধ্যে একটা ছেলে বললো...

"ওই তোদের মধ্যে জুয়েল কে রে?"" 

সবাই আমার দিকে তাকালো, ছেলেটা আমার কাছে এসে... 

ছেলেঃ ওই তুই জুয়েল? 

আমিঃ হুম আমি। 

ছেলেটা আর কোনো কথা না বলে আমার কলার চেপে ধরে টান দিয়ে বসা থেকে উঠিয়ে টানতে টানতে নিচে নিয়ে যায়। ক্লাস সহ পুরো ক্যাম্পাসের সবাই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। 

নিচে গাছ তলায় নিয়ে যায়, দেখলাম তন্নি আর ওর গুণ্ডি মেয়ে গুলা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একটা ছেলের সাথে কথা বলতেছে। তারমানে ওরাই আমাকে মারার জন্য ছেলে ফিট করেছে। আমাকে যে ছেলেটা নিয়ে যায় সে বললো... 

""" ভাই ওরে নিয়ে আসছি, """ ছেলেটা আমার দিকে তাকালো, আর সাথে সাথে বললো...

ছেলেঃ আরে জুয়েল ভাই! আপনি এখানে? 

আমিঃ ফাহাদ, তুই এখানে কেন? 

আমাদের কথা শুনে তন্নিসহ বাকি সবাই হা করে তাকিয়ে আছে, আসলে ফাহাদ ছেলেটা আমার সাথেই রাজনীতি করতো, একবার একটা মামলাও খায় আর আমিই তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করি। সেই থেকে আমাকে দেখলে সর্বোচ্চ সম্মান দেখায়। 

ফাহাদঃ ভাই এই মেয়েটা (তন্নি) আমাকে টাকা দিয়েছে একজনকে মারার জন্য কিন্তু সেই ছেলেটা যে আপনি সেটা আমাকে বলেনি। প্লিজ ভাই কিছু মনে করবেন না, নেক্সট টাইম আর হবে না। প্লিজ ভাই মাফ করে দেন। 

আমিঃ আচ্ছা বাদ দে, আমি কিছু মনে করিনি। 

ফাহাদঃ ভাই আপনি এখানে কেন? ওদিকের কি খবর? 

আমিঃ ওগুলো সব বাদ দিয়ে দিছি। আচ্ছা এসব ব্যাপারে এখানে না বললেই ভালো হয়। 

ফাহাদঃ ওকে ভাই, আমি চলে যাচ্ছি। আর ওর (যে কলার চেপেছে) ব্যবহারে কিছু মনে করবেন না। 

আমিঃ ওকে যা, কিছু মনে করিনি। 

ফাহাদঃ আর এই যে আপনি (তন্নি), নেক্সট টাইম আর আমাকে ডাকবেন না। যতসব ফাজিল মেয়ে। আচ্ছা ভাই যাচ্ছি। 

পুরো ক্যাম্পাসের স্টুডেন্টরা আমার দিকে অভাক ভাবে তাকিয়ে রইলো। সানি, আয়মান, ফারিয়া, সাদিয়া ওরাও ছিলো। 

আমি ক্লাসে চলে গেলাম, কিছুই ভালো লাগছে না। মেয়েটা এমন কেন করলো আমার সাথে? ধুর ক্লাস করবো না। সোজা ক্যান্টিনে চলে গেলাম। দেখলাম ওখানে সানিরা সবাই আছে। আমি গিয়ে ওদের পাশে বসলাম। সবাই ভুত দেখার মতো হা হয়ে আছে,,,, 

আমিঃ কিরে তোরা এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন? 

সাদিয়াঃ একটা সত্যি কথা বলবি? 

আমিঃ হুম, কি কথা? 

সাদিয়াঃ তুই কে? 

আমিঃ মানে! আমি জুয়েল। তোদের ফ্রেন্ড।

আয়মানঃ সেটা না হয় বুঝলাম, কিন্তু ছেলে গুলো তোকে দেখে এমন ভয় পেলো কেন? 

আমিঃ আরে ওরে আমি আগে থেকেই ছিনি, তাই। 

সানিঃ তুই মিথ্যা বলতেছিস। আমাদের বল, কোনো সমস্যা নাই, আমরা তোর ফ্রেন্ড কাওকে কিছু বলবো না। 

আমিঃ আরে ধুর কি বলবো? 

আয়মানঃ ছেলে গুলো তোকে দেখে এমন করলো কেন? 

সাদিয়াঃ শুধু আমরা না, তন্নি সহ পুরো ক্যাম্পাসের সবাই অবাক হয়ে গেছে। এর কারণ কি? 

আমিঃ আরে ধুর আমি নিজেই জানি না। 

সানিঃ তারমানে তুই সত্যিটা বলবি না এইতো? এই সবাই চল, এখানে থেকে আর লাভ নাই। 

আমিঃ এই কই যাস, বস এখানে। বলছি,,,

ফারিয়াঃ হুম বল তাহলে,,,, 

আমিঃ.......... (পুরো ঘটনাটা ওদের কে বললাম)

সাদিয়াঃ এই জন্যই ছেলে গুলো তোকে ভয় পেলো? 

আমিঃ হুম,,,

সানিঃ তুই কি তন্নির সাথে আবার কোনো ঝামেলা করবি? 

আমিঃ আরে না, ঝামেলা করলে প্রথমেই করতে পারতাম, কিন্তু আমি করবো না। এগুলো করার ইচ্ছা থাকলে আগের ক্যাম্পাসেই করতাম, এখানে আসতাম না। 

সাদিয়াঃ কিন্তু ও যদি তোর সাথে আবার কোনো ঝামেলা করে? 

আমিঃ করলে করুক, বাট আমি কিছু করবো না। 

সানিঃ ঝামেলা কেন করবে, আমরা কি মরে গেছি নাকি? আমরা থাকতে তন্নি আর কোনো ঝামেলা করতে পারবে না। 

আয়মানঃ হুম ঠিক বলছিস। বন্ধু যা হইছে বাদ দে। আমরা আছি, তুই টেনশন করিস না। 

সেদিন ওদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসায় চলে আসলাম। রাতে বসে বসে ভাবতেছি আমার জন্ম হলো কি শুধু ঝামেলায় পড়ার জন্য? যাও সব কিছু ছেড়ে একটু ভালো হতে চেয়েছি সেটাও সম্ভব হচ্ছে না।

তারপর খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে আবার কলেজে গেলাম। ক্লাসে গিয়ে সবার সাথে আড্ডা দিচ্ছি এমন সময় তন্নি মেয়েটা আসলো, ছেলেদের মতো শার্ট প্যান্ট পড়ে, এসে আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। আমি ওর দিকে না তাকিয়ে আবার আড্ডা দিতে শুরু করলাম। 

ক্লাস শেষ করে ক্যান্টিনের দিকে যাচ্ছি এমন তন্নির গুণ্ডি ফ্রেন্ড গুলো এসে আমাকে ঘিরে ধরলো,,,,, 

রিয়াঃ কিরে হিরো, কই যাস? 

আমিঃ দেখেন আপনাদের সাথে আমি কোনো কথা বলতে চাই না। সো আপনারা আপনাদের মতো থাকেন আর আমাকে আমার মতো থাকতে দেন। 

পলিঃ আরে তোর মতো ছোটলোক আমাদের সাথে কি কথা বলবে! তোর কোনো যোগ্যতা আছে আমাদের সাথে কথা বলার? 

মাথায় রক্ত উঠে গেলো, নিজের রাগকে কন্ট্রোল করে আর কোনো কথা না বলে সোজা হাটা দিলাম। এমম সময় তন্নি অন্য পাশ হতে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো।  

তন্নিঃ কিরে ছোটলোক কই যাস? দাঁড়া এখানে,,, 

আমিঃ আপনার সমস্যা কি? 

তন্নিঃ আমার সমস্যা তুই, তোকে দেখলেই আমার গা জ্বলে। 

আমিঃ ডাক্তার দেখান, আপনার মনে হয় চুলকানি হয়েছে। 

তন্নিঃ তুই কি ভাবছিস কাল ছেলেটার হাত থেকে বেঁচে গেছিস বলে আমিও তোকে ভয় পেয়ে যাবো? নো নেভার,,, তুই শুধু দেখ আমি তোর কি হাল করি। 

আমিঃ যা পারেন করেন, এখন সরেন সামনে থেকে। 

তারপর সোজা ক্যান্টিনে চলে গেলাম, সানিদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসার দিকে হাটা দিলাম। 

কিছুদূর যাওয়ার পর একটা ছেলে আমার পিছু নিলো। খেয়াল করলাম ছেলেটা আমাকে ফলো করছে, আরেকটু সামনে যাওয়ার পর আরো একটা ছেলে গলির ভিতর থেকে বের হয়ে ওই ছেলেটার সাথে হাটতে লাগলো। 

এভাবে মোট ৫ জন ছেলে আমার পিছু নিলো, আমি তাড়াতাড়ি হাটা শুরু করলাম, ওরাও তাড়াতাড়ি হাটা শুরু করলো। একটু পর একটা ছেলে আমাকে পিছন থেকে ডাক দেয়,,,, 

ছেলেঃ ওই সাদা শার্ট দাঁড়া! 
আমি পিছনে তাকাতেই.......

চলবে......
To Be Continue.......

লেখা ও সম্পাদনাঃ শরিফুল ইসলাম জুনিয়র

রাগী মেয়ের ভালােবাসা • পার্ট - ০১ | রাগি মেয়ের প্রেমে • পার্ট - ০১

গল্পঃ রাগি মেয়ের প্রেমে
লেখকঃ শরিফুল ইসলাম জুনিয়র
পর্বঃ ০১
চোখ মুছতে মুছতে কলেজের গেইট দিয়ে ঢুকতেছি হঠ্যাৎ করে কিছু একটার সাথে ধাক্কা খেলাম। আসলে চোখের মধ্যে একটা ময়লা পড়েছিলো তাই চোখ মুছতে মুছতে হাটতেছি। 

চোখ খুলে দেখি একটা মেয়ে আমার সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায়, আর উঠেই ঠাসসস ঠাসসস ২ টা ছড় বসিয়ে দেয়,,,,, 

মেয়েঃ এই কুত্তার বাচ্চা দেখে চলতে পারিস না? 

আমিঃ এই ভদ্রভাবে কথা বলেন, আমি ইচ্ছা করে ধাক্কা দিই নাই। আর আপনি দেখে চলতে পারেন না? 

মেয়েঃ এই ছোট লোকের বাচ্ছা, তোর সাহস তো কম না। আমার মুখে মুখে তর্ক করিস। 

আমিঃ এই আপনি আমাকে যা ইচ্ছা বলেন। মা বাবাকে কিছু বলবেন না। তাহলে কিন্তু,,,, 

মেয়েঃ তাহলে কি করবি তুই? তুই জানিস আমি কে? আমি চাইলে ১ সেকেন্ডের মধ্যে তোকে এই কলেজ থেকে বের করে দিতে পারি। 

মেয়েটার কথা শুনে মুহূর্তেই রাগ উঠে গেলো, মনে মনে ভাবলাম আমি যদি একবার আমার আগের রূপ দেখাই তাহলে বুঝবি আমি কি জিনিষ। নিজেকে সান্ত্বনা দিলাম যে, আমি এখানে লেখাপড়া করতে আসছি, কোনো ঝামেলায় পড়তে নয়। 

আমার চুপ করে থাকা দেখে মেয়েটা আরো কয়েকটা গালি আর কিছু হুমকি দিয়ে চলে গেলো। চারপাশে কিছু স্টুডেন্ট দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখতেছিলো। একজন বললো....

ছেলেঃ ভাই নিজের পায়ে নিজেই কুঠাল দিয়েছো। 

আমিঃ মানে! 

ছেলেঃ মেয়েটাকে চেনো?

আমিঃ না। 

ছেলেঃ কলেজে আজ মনে হয় নতুন? 

আমিঃ হুম, ট্রান্সফার নিয়ে আসছি। ৩য় সেমিস্টার,,,, 

ছেলেঃ ও আচ্ছা, সেজন্যই তো। মেয়েটার বাবা এই কলেজের সভাপতি, অনেক ক্ষমতাবান ব্যক্তি। এক নামে সবাই চেনে, মেয়েটা বাবার ভয় দেখিয়ে যা ইচ্ছা তাই করে। ওর সাথে কেউ টাক্কা দিয়ে পারে না। 

ছেলেটার কথা শুনে আমি হাসতেছি, তারপর ছেলেটা বললো...

ছেলেঃ কি ব্যাপার হাসছো কেন? 

আমিঃ না এমনি, আচ্ছা যাই ভাইয়া পরে কথা হবে। 

এরপর ক্লাসের দিকে হাটা দিলাম, চলেন এবার আপনাদের পরিচয় টা দিয়ে দিই। আমি জুয়েল, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়তেছি, আপাতত আমার কেউই নাই। এক ধরনের এতিম। আবার এটা ভাববেন না যে আমার বাবা মা নেই! 

সবাই আছে, কিন্তু আমাকে বাসা থেকে বের করে দিছে। এখনো কিছু বুঝছেন নাতো? চলেন বুঝিয়ে বলি..... 

আমি ছিলাম বখাটে ছেলেদের লিডার, এমন কোনো খারাপ কাজ নেই যেটা আমি করিনি, মারামারি, রাজনীতি এমনকি মাদকের ব্যবসাও করেছি। প্রতিদিন আমার নামে বাসায় বিচার আসতো, বাবা প্রতিদিন আমাকে অনেক বকাঝকা করতেন কিন্তু কোনো হতো না। এভাবেই দিন যাচ্ছিলো আর বাবা আমার উপর দিন দিন খেপে কাঠ হয়ে যাচ্ছিলো। 

একদিন আমার এক বন্ধু একটা মেয়েকে প্রপোজ করে কিন্তু বন্ধু বখাটে বলে মেয়েটা রিজেক্ট করে দেয়, তারপর আমরা মেয়েটার বাসায় গিয়ে ওর বাবাকে মেরে মেয়েটাকে বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে আসি। কিন্তু ভুলবশত কারনে মেয়েটা পালিয়ে যায়। পরে আমাদের সবার নামে মামলা দেয়, সেজন্য বাবাকেও থানায় যেতে হয়। অনেক কষ্টে জরিমানা দিয়ে বাবা আমাকে বাসায় নিয়ে আসে। 

এরপর সবার সামনে ডান গালে একটা চড় বসিয়ে দিয়ে বলে,,, "তোর মতো ছেলের দরকার নেই, আজ থেকে তুই এই বাসায় থাকতে পারবি না, আমি মনে করবো আমাদের কোনো সন্তান ছিলো না। তোর মতো কুলাঙ্গার কে জন্মদিয়েই আমি ভুল করেছি। বেরিয়া যা এখন বাসা থেকে, যদি জীবনে কখনো ভালো হতে পারিস তখন আমার সামনে আসবি। আর নহলে আমি মরে গেলেও আসবি না। 

মা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব কিছু দেখতেছিলো, কিছু বলার থাকলেও বলতে পারছে না, কারণ বাবার কথার উপর কথা বলার মতো সাহস আম্মুর আদো হয়ে উঠেনি। বাবার কথা গুলো সহ্য করতে না পেরে বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম। 

সেদিন ভেবেছিলাম, বাসা থেকে বের হয়ে গেলে ভালো থাকতে পারবো কিন্তু না, যখন বাইরে চলে আসলাম দেখলাম আমার পাশে কেউই নেই, আমার রাজনীতি, গুণ্ডামি এলাকার বড় ভাই কেউই ছিলো না। রাস্তার কুকুর পর্যন্ত আমাকে ঘৃণা চোখে দেখেছে। 

অনেক জনকে কল দিলাম, কেউই আমাকে সাহায্য করতে আসেনি। সেদিন রাতটা রাস্তার পাশে একটা ল্যাম্পপোস্ট এর নিচে কাটাই, আমি একা না, আমার পাশে কিছু কুকুরও ছিলো। তখন বুঝলাম মাথার উপরে বাবার ছায়াটা কতো গুরুত্বপূর্ণ। 

তখন সিদ্ধান্ত নিলাম যে ভালোভাবে পড়ালেখা করে মানুষের মতো মানুষ হয়ে বাবার সামনে গিয়ে দাঁড়াবো। আর আজ থেকে সব ধরনের রাজনীতি, গুণ্ডামি বাদ দিয়ে দিলাম, সাধারণ ভাবে চলবো। কোনো দিন বিপদে পড়লেও আর এই লাইনে আসবো না। 

তারপর এক মামাতো ভাইয়ের সাহায্যে আগের কলেজ থেকে ট্রান্সফার নিয়ে এই কলেজে চলে আসলাম, এবং ২ টা টিউশনি নিলাম। ওগুলো দিয়েই নিজের খরচ চালিয়ে যাচ্ছি। আর আজকেই প্রথম দিন। প্রথম দিনই কি ঘটলো আপনারাতো দেখলেন,,,  

আপনাদের পরিচয় দিতে দিতে প্রিন্সিপাল এর রুমে চলে আসলাম,,,, 

আমিঃ আসসালামু আলাইকুম, স্যার আসতে পারি। 

স্যারঃ হুম আসো! কি চাই,,, 

আমিঃ স্যার আমাকে জাহিদ ভাই (মামাতো ভাই) পাঠিয়েছে। আপনার সাথে কথা বলার জন্য বলেছে।

স্যারঃ ও আচ্ছা আচ্ছা। তোমার কথা আমাকে জাহিদ বলেছিলো। কি যেন নাম তোমার? 

আমিঃ জ্বি স্যার জুয়েল! 

স্যারঃ আচ্ছা ভালো, এখানে কোনো সমস্যা হলে তুমি সরাসরি আমাকে জানাবে। আর কোনো কিছুর দরকার হলেও বলবে। 

আমিঃ জ্বি স্যার অবশ্যই। 

স্যারঃ ওকে এবার ক্লাসে যাও। ক্লাস রুম চেনো? 

আমিঃ না স্যার নতুন তো, তাই চিনতেছিনা। 

স্যারঃ সমস্যা নেই ৩ তলার শেষের রুম। আর আমি অন্যান্য স্যারদেরকে বলে দিবো তোমার কথা। সবার সাথে পরিচিত হয়ে নিও। যাও ভালো করে পড়ালেখা করো। 

আমিঃ ধন্যবাদ স্যার। আসসালামু আলাইকুম,,,,

তারপর অফিস থেকে বের হয়ে ক্লাসে গেলাম, সবাইক অনেক চিল্লাচিল্লি করতেছিলো আমাকে দেখে সবাই ভুত দেখার মতো স্তব্ধ হয়ে গেলো। আসলে হওয়ারই কথা, ওরা এতোদিন ধরে ক্লাস করছে আমাকে তো এর আগে দেখেনি। আমি গিয়ে পেছনের একটা টেবিলে গিয়ে বসলাম। আমার পাশের জন আমাকে জায়গা দিয়ে সরে বসে গেলো এরপর মোবাইল টিপতেছে। আমিও কোনো কথা না বলে মাথা নিচু করে বসে আছি। 

বাম পাশে তাকিয়ে দেখি ওই মেয়েটা যার সাথে একটু আগে আমার কথা কাটাকাটি হয়েছে। তারমানে মেয়েটার আমার সাথেই পড়ে! ধুর শালা যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়। খেয়াল করে দেখলাম আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

একটু পর স্যার আসলো, সবাই উঠে দাঁড়ালো, আমি উঠলাম, স্যার আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো..

স্যারঃ এই তুমিই জুয়েল? 

আমিঃ জ্বি স্যার (দাঁড়িয়ে)

স্যারঃ আচ্ছা বসো। এই সবাই শোনো ও তোমাদের নতুন বন্ধু। ট্রান্সফার নিয়ে এসেছে, আজ থেকে তোমাদের সাথে পড়ালেখা করবে। ক্লাস শেষে সবাই পরিচয় করে নিও। এখন বই নাও,,,, 

এরপর ক্লাস শুরু হলো, মনোযোগ সহকারে ক্লাস করলাম, জীবনে প্রথম এতো মনোযোগ দিয়ে ক্লাস করলাম, ভালোই লাগলো। ক্লাস শেষে আমার পাশে থাকাটা ছেলেটা একটা হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে,,, হাই আমি ""হাকিম""

আমিঃ হ্যালো, আমি জুয়েল। 

হাকিমঃ আগে কোথায় ছিলা? 

আমিঃ (আগের ঠিকানা দিলাম)

হাকিমঃ ও আচ্ছা ভালো। 

আমিঃ একটা কথা বলতাম। 

হাকিমঃ হুম, বলো। 

আমিঃ ওই মেয়েটা (ঝগড়া হওয়া সেই মেয়েটা)....

হাকিমঃ আরে ওর নাম তন্নি! এই ক্যাম্পাসের সবচেয়ে জেদি মেয়ে। কতো ছেলে যে চড় খাইছে ওর হাতে হিসেব নেই। ওর বাবার ক্ষমতা দেখিয়ে যেকোনো কাজ করে ফেলে। ভুলেও ওর কাছে যাবে না। 

আমিঃ আরে না, এমনি জিজ্ঞের করলাম। 

হাকিমঃ আচ্ছা ঠিক আছে থাকো, আমি চলে যাচ্ছি। 

আমিঃ আর ক্লাস করবে না? 

হাকিমঃ না, gf পার্কে বসে আছে। তাড়াতাড়ি না গেলে সমস্যা,,, 

আমিঃ হা হা আচ্ছা ঠিক আছে যাও। 

হাকিমঃ ওকে পরে দেখা হবে। 

এরপর হাকিম চলে গেলো, আমি একা একা বসে রইলাম। আরো একটা ক্লাস করলাম।

বিরতির সময় আমি ব্যাগ ঘোচাচ্ছি এমন সময় পেছন থেকে কেউ একজন হাত ধরে টান দিলো। তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে... 

মেয়েঃ আমি ফারিয়া! 

আমিঃ জ্বি আ আমি জুয়েল। 

ফারিয়াঃ ফ্রেন্ড.??? (হাত একটা বাড়িয়ে দিয়ে)

আমি কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম, আসলে জীবনে কোনো মেয়েই আমার ফ্রেন্ড হতে চায়নি। না হওয়ারই কথা বখাটে ছেলেদের কোনো মেয়েই পছন্দ করে না। কিন্তু সুন্দর মেয়ে গুলোর কপারে বেশিরভাগ বখাটে ছেলেই থাকে। আমার এই ভাবে চুপ করে থাকা দেখে ফারিয়া বললো... 

ফারিয়াঃ ওই মিস্টার! জাস্ট ফ্রেন্ডশিপ করতে চেয়েছি। বিয়ে করতে নয়, এতো চিন্তা করার কি আছে। 

আমিঃ না সরি। ওকে ফ্রেন্ড,,,

ফারিয়াঃ আচ্ছা আজ থেকে একজন অন্যজনকে তুই করে বলবো। আপনি বা তুমি এগুলো আমার পছন্দ না। 

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে। 

ফারিয়াঃ চল এখন! 

আমিঃ কোথায়? 

ফারিয়াঃ ক্যান্টিনে, আমার বাকি ফ্রেন্ডসদের সাথে তোর পরিচয় করিয়ে দিবো। 

আমিঃ হুম চল। 

এরপর ক্যান্টিনে গেলাম। অনেক স্টুডেন্ট ওখানে বসে আছে, আমজ ফারিয়ার পিছু পিছু হাটতেছি, একটা টেবিলের পাশে গিয়ে ফারিয়া বললো... 

ফারিয়াঃ গ্যায়েজ! ওর হচ্ছে জুয়েল। আমাদের নতুন ফ্রেন্ড।

তারপর সবাই পরিচয় দিতে লাগলো... হাই আমি সানি, আমি আয়মান, আমি সাদিয়া। 

আমিও আমার পরিচয় দিলাম। সাদিয়া বললো...

সাদিয়াঃ আমাদের ফ্রেন্ডসদের মধ্যে আপনি বা তুমি চলে না। শুধু তুই চলে। আমরাও তোকে তুই বলবো তুইও আমাদের তুই বলবি। 

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে। 

সানিঃ এবার বল কি খাবি? 

আমিঃ আপনারা যেটা খাবেন। 

আয়মানঃ ফারিয়া! ও মনে হয় আমাদের আপন করে নিতে পারেনি। 

সাদিয়াঃ এই তুই করে বলার জন্য বলেছিনা? 

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে, তোরা যেটা খাবি সেটাই অর্ডার দে। 

আসলে ছেলে মেয়ে গুলো যে এতো মিশুক, এতো ভালো ম্যান্টেলিটির ওদের সাথে না মিশলে হয়তো জানতাম না। একদিনেই এতো আপন করে নিলো আমাকে? ভাবতেই ভালো লাগছে। 

হঠ্যাৎ করে দেখলাম সেই ফালতু মেয়েটা আমার দিকে আসছে। চোখ মুখ লাল হয়ে আছে, আমার কাছে এসেই.....

চলবে......
To Be Continue.......

লেখা ও সম্পাদনাঃ শরিফুল ইসলাম জুনিয়র

শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৯

আল্লাহ তা'আলা অবশ্যই সু-বিচারক

বাসর রাতে  

সহবাসের পর স্বামী তার স্ত্রীর হাতে
৩০০ টাকা দিলো ...

-স্বামীঃ এই লও ৩০০ টাকা |

স্ত্রীঃ কিসের টাকা.. !? 

স্বামীঃ বিয়ের আগে পাড়ায় যেতাম,
৩০০ টাকা দিয়ে একবার জেনা করতাম |
তোমাকেও সেই মোতাবেক দিলাম । 
( স্ত্রী ৩০০ টাকা নিয়ে সেখান থেকে
১০০ টাকা ফেরত দিলো )...

স্ত্রীঃ এই লও ১০০ টাকা |

স্বামীঃ কিসের ১০০ টাকা?

স্ত্রীঃ বিয়ের আগে আমিও পাড়ায় যেতাম, সেখানে হোটেল
ম্যানেজার প্রতিবারে ২০০ টাকা করে
দিতো`|||বাকি ১০০ টাকা হোটেল ম্যানেজার
রুম ভাড়া নিতো! তুমি তো আমার স্বামী তোমার
থেকে বেশি নিতে পারবো না। 

এবার লও ঠেলা 🤧 
নিজের নাই চরিত্র বউ খোঁজো পবিত্র....... !? (সংগৃহীত)

মোরালঃ বর্তমানে বেশিরভাগ ছেলেরাই এই পাপকাজে জড়িত এবং বিয়ের আগে তারা এ ধরনের কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়লেও বিয়ের জন্য সতী সাবিত্রী মেয়ে খুজে, একেবারে ভার্জিন!! 
 অতএব আগে নিজের চরিত্র ঠিক করুন, আল্লাহ তা'আলা অবশ্যই সু-বিচারক । 

সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৯

ফাজিল বউ!

স্বামী প্রতিরাতে ঘুম থেকে যখনই জেগে উঠে, দেখেন স্ত্রী আলাদা কম্বল গায়ে শুয়ে আছে । 
কিন্তু বিম্ময়কর ব্যাপার হলো, স্ত্রীর কম্বলের ভেতর থেকে এক ধরণের নূর বের হয় প্রতি রাতে। 
স্বামী এই কেরামতির রহস্য জানার জন্য মাসজিদের ইমামের কাছে যান । 
ইমাম সাহেব সব কিছু শুনে যা বললেন, তা শুনে তো স্বামীর মাথাই নষ্ট । 😰
ইমাম সাহেব বললেন, 
কম্বলের ভেতর থেকে নূর বের হচ্ছে না । বরং ভালো করে খেয়াল করলে দেখবেন, আপনার স্ত্রী কম্বলের নীচে গোপনে ফেসবুক চালাচ্ছে ... 😂

You can read more

কোরআন ও হাদিস স্বীকৃত আয়াতে শেফা বা সুস্থ হবার তদবির

সুস্থতা-অসুস্থতা উভয়টিই আল্লাহর নেয়ামত। সুস্থ হলে মানুষ বেশি করে আল্লাহর ইবাদত করতে পারে। শোকর আদায় করে কৃতজ্ঞ হতে পারে। আর অসুস্থ হলে আল্লা...